জ্বিন আছরের লক্ষণ সমূহ

জ্বিনের আছরের লক্ষণগুলো দুইভাবে বিভক্ত-

১) নিদ্রাবস্থার লক্ষণ

২) জাগ্রত অবস্থার লক্ষণ

নিদ্রাবস্থার লক্ষণসমূহঃ

১) নিদ্রাহিনতা : সারারাত ঘুম না হওয়া অথবা বিছানায় দীর্ঘসময় গড়াগড়ি করার পরে সামান্য ঘুম হওয়া ।

২) অস্থিরতা : রাতে বারবার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া ।

৩) স্লিপ প্যারালাইসিস বা ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত (বোবায় ধরা) : ঘুমের মধ্যে কেউ কস্ট দিচ্ছে বা চেপে ধরছে এমনটা মনে হওয়া এবং জাগ্রত হওয়ার চেস্টা করার পরেও জাগ্রত হতে না পারা ।

৪) ভীতিকর সপ্ন দেখা ।

৫) বিভিন্ন ধরণের প্রানী স্বপ্নে দেখা । যেমন : বিড়াল কুকুর, উট, সাপ(*), সিংহ, খেঁকশিয়াল, ইঁদুর ইত্যাদি । (স্বপ্নে যত সংখ্যক প্রাণী দেখবে; তত সংখ্যক জ্বিন সাথে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।)

৬) ঘুমের মধ্যে দাত দিয়ে নক কাটা ।

৭) নিদ্রাবস্থায় হাসি, কান্না অথবা জোড়ে চিৎকার করে ওঠা ।

৮) ঘুমের মধ্যে উচ্চস্বরে কথা বলা, খুব জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়া, গোঙানো বা কেদে ওঠা ।

৯) ঘুমের মধ্যে অচেতন অবস্থায় দাড়িয়ে যাওয়া বা হাটা-চলা করা ।

১০) উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা ।

১১) স্বপ্নে নিজেকে কোন কবরস্থানে, আবর্জনাময় স্থানে অথবা কোন ভয়ংকর রাস্তায় দেখা ।

১২) অস্বাভাবিক আকৃতির মানুষ সপ্নে দেখা । যেমন : অনেক বেশি লম্বা, অনেক বেশি খাটো অথবা কালো কুৎসিত ।
(‘বিকায়াতুল ইনসান মিনাল জিন্নি ওয়াশ শায়ত্বান’ কিতাব থেকে থেকে অনুবাদিত ।)

সংযুক্ত-

১৩) ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল কথাবার্তা বলা ।

১৪) ব্রুক্সিজম বা ঘুমের মধ্যে দাাঁত কিড়মিড় করা ।

১৫) ঘুমের মধ্যে কিছু খাওয়া ।

জাগ্রত অবস্থার লক্ষণসমূহঃ

১) সর্বদা মাথাব্যাথাঃ চোখ, নাক, কান, দাত, গলা অথবা পাকস্থলীর কোনো সমস্যা ছাড়াই সর্বদা মাথাব্যাথা । যা ঔষধ খেয়েও নিরাময় হয়না ।

২) ইবাদাত বিমুখতাঃ যিকর, নামায এবং অনন্য ইবাদাতের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যাওয়া ।

৩) বিভিন্ন রকমের মানসিক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া।

৪) প্রচণ্ড শারীরিক দূর্বলতা এবং অলসতা ।

৫) মৃগীরোগ ।

৬) ডাক্তারি চিকিৎসায় কোন সমস্যা খুঁজে না পাওয়া সত্বেও শরীরের কোন অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া বা প্রায় সময়ই ব্যাথা থাকা । (‘বিকায়াতুল ইনসান মিনাল জিন্নি ওয়াশ শায়ত্বান’ থেকে অনুবাদিত ।)

সংযুক্ত-

৭) সর্বদা মেজাজ বিগড়ে থাকা; কোনো কিছুতেই মন না বসা।

৮) অকারণে কান্নাকাটি করা ।

৯) যখন-তখন রেগে যাওয়া।

১০) অস্বাভাবিক আচরণ করা।

১১) খারাপ আচরণ করতে না চাওয়া সত্ত্বেও ব্রেনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খারাপ আচরণ প্রকাশ পাওয়া ।

১২) হঠাৎই অজ্ঞান বা বেহুশ হয়ে যাওয়া।

১৩) শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া।

১৪) দাঁতে-দাঁতে খিল লেগে যাওয়া।

(১৫) মুখ থেকে ফেনা বের হওয়া ।

১৬) চেহারার রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া ৷

১৭) কেহ ডাকছে এমনটা মনে হওয়া, অথচ আশপাশে কাউকেই খুঁজে না পাওয়া যায়না ।

১৮) সবার মাঝে থেকেও কারো কথা শুনতে পাওয়া যা পাশের লোকও ‍শুনেনা ।

১৯) হ্যালুসিনেশন অর্থ্যাৎ জাগ্রত অবস্থায় স্বপ্নের মত বিভিন্ন কিছু দেখতে পাওয়া যা পাশের লোকজন দেখতে পায়না ।

২০) একাকী ও নির্জনে থাকতে পছন্দ করা ।

২১) সব সময় ভীতু ভীতু একটা ভাব থাকা ।

২২) হঠাৎ করে ভিন্ন ভাষায় বা ভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলা ।

২৩) অন্য ধর্মাবলম্বীদের সাজ-সজ্জা পছন্দ করতে শুরু করা । বা ধর্মীয় কোনো রীতি-নীতি প্রকাশ পাওয়া । (যে ধর্মের রীতি-নীতি প্রকাশ পাবে, বুঝতে হবে সে ধর্মের জিন আছর করেছে । যেমন, উলুধ্বনি দেওয়া হিন্দু জিন আছরের লক্ষণ ।)

২৪) সন্তানকে বুকের দুধ খেতে না দেয়া বা সন্তানের খেতে না চাওয়া ।

২৫) পূর্বের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া ।

২৬) কুরআন তিলাওয়াত ও বিশেষ করে আজান সহ্য না হওয়া ।

বিঃদ্রঃ ১, এ সমস্ত লক্ষণগুলো ওহীর মাধ্যমে প্রমাণিত নয়, কেবলই অভিজ্ঞতার আলোকে প্রমানিত; যা অবশ্যই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা রাখে ।

বিঃদ্রঃ ২, উপরোল্লিখিত লক্ষণগুলোর ২/১ টা লক্ষণ হঠাৎ কখনো ২/১বার প্রকাশ পেলেই জ্বিনের আছর বলে ধরে নেয়া যায়না । কারণ, এগুলোর মধ্য থেকে কিছু কিছু লক্ষণ অন্য কোন শারীরিক বা মানসিক কোন রোগের কারনেও প্রকাশ পেতে পারে । অতএব, এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ লক্ষণ প্রায়ই কারো মাঝে প্রকাশ পেলে এবং ডাক্তারি চিকিৎসায় কোন সমস্যা খুঁজে না পাওয়া গেলে; তার বিষয়ে জ্বিনের আছরের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য রুকইয়াহ’র মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা উচিত ।

error: Content is protected !!