বন্ধ্যাত্ব ও পরকীয়া, সুস্থতা ও সংশোধন

হযরত যাকারিয়া (আ.) এর স্ত্রী ছিলেন বন্ধ্যা, যে কারণে তাদের সন্তান-সন্ততি হচ্ছিলনা । বৃদ্ধ বয়সে এসে যাকারয়িা (আ.) আল্লাহর কাছে দুয়া করলেন-

وَزَكَرِيَّا إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ

‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সন্তানহীন করে রেখ না, যদিও তুমি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (সূরা আম্বিয়া -৮৯)

এই দুয়ার প্রেক্ষিতেই আল্লাহ পাক তার দোয়া ক্ববুল ও সন্তানের সুসংবাদ বাণী প্রেরণ করলেন । ইরশাদ হয়েছে—

فَاسۡتَجَبۡنَا لَهٗ ۫ وَ وَهَبۡنَا لَهٗ یَحۡیٰی وَ اَصۡلَحۡنَا لَهٗ زَوۡجَهٗ ؕاِنَّهُمۡ کَانُوۡا یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ وَ یَدۡعُوۡنَنَا رَغَبًا وَّ رَهَبًا ؕوَ کَانُوۡا لَنَا خٰشِعِیۡنَ

অর্থ- অতঃপর আমি তার (যাকারিয়া (আঃ)-এর) ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম, এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া । আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী/সুস্থ/সংশোধন করেছিলাম । তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত, আর আমাকে আশা ও ভীতি সহকারে ডাকত । আর তারা ছিল আমার নিকট বিনয়ী। (সূরা আম্বিয়া-৯০)

কোন কোন মুফাস্সিরগণ আয়াতে উল্লেখিত “আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী করেছিলাম” এই অংশ দ্বারা চারিত্রিক উপযোগীতাও উদ্দেশ্য নিয়েছেন । তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুফাস্সিরদের মতে বন্ধ্যাত্ব দূর করে সন্তান জন্মদানের জন্য শারীরিক উপযোগীতাই উদ্দেশ্য । আর এটাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা ।

অভিজ্ঞতার আলোকে প্রমাণিত যে, স্বামী/স্ত্রীর পরকীয়া, ঝগড়াটে স্বভাব অথবা খারাপ আচরণ ইত্যাদি চারিত্রিক ত্রুটি সংশোধনের নিয়তে, অথবা দু’জনের কারো দীর্ঘকালীন কোন শারীরিক অসুস্থতা, বিশেষ করে স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব রোগ থেকে মুক্তি লাভের নিয়তে আল্লাহ’র শক্তি ও দয়ার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসী ও আশাবাদী হয়ে, বেশি বেশি নিম্নোক্ত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে উদ্দিষ্ট পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ্ ।

তবে দু’আ কবুলের জন্য আয়াতে উল্লেখিত গুণাবলীর প্রতি যত্ন রাখা জরুরী । যেমন—

  1. আল্লাহর নিকট বিনীত হওয়া

  2. কাকুতি-মিনতি সহকারে প্রার্থনা করা

  3. সৎকাজে প্রতিযোগিতা করা

  4. আশা ও ভীতির সাথে তাঁকে ডাকা।

আমল পদ্ধতিঃ

তাহাজ্জুদে বা যখনই সুযোগ হয় এই আয়াত তিলাওয়াত করে বেশি বেশি কাঙ্খিত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য স্বামী/স্ত্রীর জন্য দুয়া করবেন, যখনই সুযোগ পাওয়া যায় আয়াতটি ৭/২১ বা যথাসম্ভব বেশি বার তিলাওয়াত করে স্বামী/স্ত্রীর গায়ে ফুঁ দিবেন, বিশেষতঃ ফজরের পূর্বে ও মাগরিবের পূর্ব ফুঁ দেয়া যেতে পারে । পাশাপাশি ফজর ও এশার পরে কয়েকবার আয়াতটি তিলাওয়াত করে মধু, কালোজিরার দানা/তেল, বৃষ্টি বা জমজমের পানি, অথবা সাধারণ পানিতে ফুঁ দিয়ে স্বামী/স্ত্রীকে খাইয়ে দিবেন ।

সকল নিঃসন্তান দম্পতির কোল জুড়ে আল্লাহ সু-সন্তান দান করুন । আমীন ।

error: Content is protected !!