কেস স্টাডি : কবরের যাদু

যাদুর মূল উৎসের যতটা কাছাকাছি পৌঁছা যাবে, আল্লাহ চাইলে তত দ্রুত তার সমাধানে পৌঁছা যাবে । অনেক রোগী আছেন যারা দীর্ঘদিন যাবত যাদুতে আক্রান্ত । অনেক পুরনো যাদু হওয়ায় লম্বা সময় ধরে রুকইয়াহ করেও কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছেন না, তাদের উচিত যাদুর মূল উৎসের কাছাকাছি পৌঁছার চেষ্টা করা । উৎস জানা থাকলে গিয়ে সেখানে গিয়ে কিছুদিন রুকইয়াহ করা ।

উদাহরণস্বরুপ— আপনি বর্তমানে শহরে বসবাস করছেন, আর সেখানে থেকেই রুকইয়াহ করছেন । কিন্তু আপনাকে যাদুটা করা হয়েছে গ্রামের বাড়ির দিক থেকে । অথবা আপনার সমস্যাটির শুরু হয়েছে গ্রামের বাড়ি থাকাকালীন সময় থেকে । সেক্ষেত্রে গ্রামের বাড়ি গিয়ে কিছুদিন স্ট্রং আমল করলে হয়তবা বেটার একটা ফলাফল পেতে পারেন—ইনশাআল্লাহ্ ।

কেস স্টাডি — যাদুর খাদিম জ্বীন দ্বারা আক্রান্ত আমার একজন পেশেন্ট কে ৪/৫ সেশন রুক‌ইয়াহ করার পরেও জ্বীনটিকে ঘায়েল করা যাচ্ছিল না। তবে কবর সংক্রান্ত আয়াত তিলাওয়াত করলে জ্বীনটি প্রচণ্ড খেপে যেত এবং মারাত্মক কষ্ট পেত । সন্দেহ করলাম যে, কবরের যাদু থাকতে পারে। কিন্তু রোগীরা শহরে যেখানে ভাড়া থাকতো সেখানে তারা নতুন এসছিল এবং বাসার আশপাশে কোনো কবর‌ও ছিলো না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে, গ্রামে তাদের বাড়ির মধ্যেই কবর রয়েছে। ভেবেচিন্তে তাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে রুক‌ইয়াহ করার জন্য একটা শিডিউল দিলাম। তারিখ অনুযায়ী সেখানে গিয়ে সেশন শুরু করার আনুমানিক আধা ঘন্টা যেতে না যেতেই মেয়েটি হঠাৎ করে ‘আগুন আগুন’ বলে চেঁচিয়ে উঠলো। আমি তিলাওয়াত চালিয়ে যেতে থাকলাম, কিছুক্ষণ পরে আবার চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বললো— “বাবার কবরে আগুন জ্বলে আগুন”।

আমি তিলাওয়াত থামিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম এবং সে কী দেখেছে জানতে চাইলাম। বলল— সে দেখতে পাচ্ছে যে, তার বাবার কবরে ধাউ ধাউ করে আগুন জ্বলছে। তাকে নিয়ে তার বাবার কবরের কাছে যেতে চাইলাম, কিন্তু সে কিছুতেই যাবে না। তার চোখের সামনে নাকি শুধু কবরের আগুন ভাসছে । এক পর্যায়ে জোড় করে তাকে কবরের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো । কবরের মাটি ছুঁতেই সে আবারো চিৎকার করে নির্দিষ্ট একটি জায়গা দেখিয়ে বলতে লাগলো— “এখানে আগুন এখানে” ।

বুঝতে আর বাকি র‌ইলো না। যাদু কোথায় পুঁতে রাখা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু কবর খুঁড়তে গেলে এলাকায় আলোড়ণ প্লাস আতঙ্ক সৃষ্টি হবে, আবার রোগী যেহেতু মেয়ে মানুষ, জ্বীন-যাদুতে আক্রান্তের কথা এলাকায় জানাজানি হলে ভবিষ্যতে বিয়েশাদীর বেলায় এর ব্যাপক একটা প্রভাব পড়তে পারে, তাই কবর না খুঁড়ে উপর থেকেই প্রচুর পরিমাণে যাদু নষ্টের পানি ঢেলে কবর একদম ভিজিয়ে দিতে বললাম।

জ্বলন্ত আঙ্গারে পানি ঢাললে যেভাবে তা ‘ধপ’ করে নিভে যায়, বাবার কবরে যাদু নষ্টের পানি ঢালার পরে মেয়েটি‌ও তেমনিভাবে ‘ধপ’ (!) করে শান্ত হয়ে গেলো।‌

সুবহানাল্লাহ্

✓ জ্বীন-যাদুতে আক্রান্ত সকল মুসলমান ভাই-বোনদেরকে আল্লাহ পাক পরিপূর্ণ সুস্থতা দান করুন। সকল যাদুগ্রস্তকে যাদু থেকে মুক্তি দান করুন। আমীন ।

error: Content is protected !!