যাদুর অবস্থান রোগীর যত কাছে হয়, ততই তা শক্তিশালী হয় । আর রোগী যাদু থেকে যত দূরে যায়, রোগীর উপরে তার প্রভাব ততটাই কমতে থাকে । অবশ্য যাদুর কিছু কিছু ক্যাটাগরিতে বিষয়টা এরকম নাও হতে পারে ।
রোগীকে সবসময় যাদুর কাছে রাখার জন্য বা ভিন্ন শব্দে বললে, যাদুর বস্তুকে স্থায়ীভাবে রোগীর সর্বাধিক কাছে রাখার জন্য জ্বীন বা যাদুকরের সবচেয়ে মোক্ষম ‘থলে’ হচ্ছে — রোগীর পেট । যেহেতু তখন সে যেখানেই যাক, যাদুর বস্তু তার থেকে কখনোই আলাদা হচ্ছে না । যার পেটে যাদুর বস্তু আছে সে তো নামাজ, ঘুম, ঘর, মসজিদ সব জায়গায়ই যাদু বহন করে নিয়ে বেড়ায় । আর এজন্যই যাদু রাখার জন্য জ্বীন ও যাদুকরের ফার্স্ট চয়েজ হচ্ছে — পেট ।
- পেটের মধ্যে যাদু ঢুকানোর সহজ উপায় তো হচ্ছে রোগীর কাছের লোকদের মধ্যে কেহ যাদুকরের কাছ থেকে যাদু করা খাবার নিয়ে এসে তাকে খাওয়ানো ।
- তবে যাদুকরের যদি রোগীর কাছে এ্যাক্সেস না থাকে, সে রোগীর দূরের কেহ হয়, বা কাছের কেহ হলেও তাকে খাওয়ানোর সুযোগ না পায়, সেক্ষেত্রে সেকেন্ড অপশন হচ্ছে রোগীর ঘুমের মধ্যে জ্বীনের সাহায্যে যাদুর বস্তু খাইয়ে দেয়া । সেটা কোন খাদ্য বস্তুও হতে পারে, আবার কয়লা, চুল, মাটি ইত্যাদি অখাদ্য বস্তুও হতে পারে ।
পূর্ব অভিজ্ঞতা ও জানাশোনা না থাকলে বিষয়টি শুনতে আপনার কাছে বিস্ময়কর লাগলেও লাগতে পারে, তবে আমাদের এরকম ডজন ডজন অভিজ্ঞতা আছে ।
এমনও হয়েছে যে, রোগী গত এক মাসে গরুর গোশত খায়নি, কিন্তু রুকইয়াহ করার পরে তার পেট থেকে দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশতের টুকরা বের হয়েছে । এমনও পেয়েছি যে, রুকইয়াহ করার পরে রোগীর পেট থেকে চুল বের হয়েছে । এরকম আরো অনেক অখাদ্য বস্তু বা রোগী রিসেন্টলি খায়নি এরকম খাদ্য বস্তুও বের হয়েছে ।
তবে হ্যাঁ, স্বপ্নে খেতে দেখলেই সেটা নিয়ে অযথা ভয়ের কিছু নেই । খাবার খাওয়ার স্বপ্ন দেখা মানেই নিশ্চিতভাবে যাদুর বস্তু খাওয়া নয় । স্বপ্নের বড় একটি অংশেই আমাদের চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মের প্রভাব রয়েছে । আমাদের সারাদিনের চিন্তভাবনা ও কাজকর্মের কারনেও আমরা খাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি এবং এটি খুব স্বাভাবিক ।
কিছু লক্ষণের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনার খাওয়ার স্বপ্নটি স্বাভাবিক স্বপ্ন ছিলো, নাকি অস্বাভাবিক কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । ইতিপূর্বে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত লিখেছি বিধায় এখন আর রিপিট করছিনা, আগ্রহী পাঠক এই লিংক থেকে দেখে নিতে পারেন । https://muftialamin.com/eating-in-the-dream/
লক্ষণের আলোকে আপনি যদি বুঝতে পারেন যে, আপনাকে স্বপ্নে বা বাস্তবে যাদুর বস্তু খাওয়ানো হয়েছে, কিংবা স্বপ্নে এখনো প্রায়ই আপনাকে যাদুর বস্তু খাওয়ানো হয়, সেক্ষেত্রে আপনার করনীয় হচ্ছে—
বমি বা টয়লেটের সাথে যাদুর বস্তু (যদি তা পেটে এখনো অবশিষ্ট থাকে) অথবা যাদুর প্রভাব (দীর্ঘদিন থাকার ফলে যদি যাদুর বস্তু পেটে বিলীন হয়ে যায়, অথবা তরল কোন জিনিস পান করানোর মাধ্যমে আপনাকে যাদু করা হয়ে থাকে) পেট থেকে বের করে ফেলা ।
এটার জন্য আপনি নিম্নোক্ত প্রেসক্রিপশন ফলো করতে পারেন—
- পেটের যাদু নষ্টে সোনাপাত (১ দিন)
- যাদু নষ্টে বরই পাতা (৭ দিন)
- যাদু নষ্টের গোসল (৭ দিন)
- পেটের যাদু নষ্টের আয়াত তিলাওয়াত করে পানি, মধু এবং অলিভ অয়েলে ফুঁ দিয়ে সকালে খালি পেটে ও রাতে ঘুমের পূর্বে পান করবেন । (১৪ দিন) ।
- তিলাওয়াতে অপারগ হলে বা মহিলাদের ক্ষেত্রে নামাজ বন্ধের সময়ে তিলাওয়াতের পরিবর্তে যাদু নষ্টের নিয়তে নিম্নোক্ত অডিও দু’টি শুনতে পারেন ।
- যাদু নষ্টের রুকইয়াহ – Ruqyah of black magic
- যাদু নষ্টের আয়াত
আল্লাহ চাহে তো এর মধ্যেই আপনি পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবেন— ইনশাআল্লাহ্ । উপরের স্টেপগুলো ফলো করার পরেও যদি আপনার সমস্যার সমাধান না হয়, সেক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে একজন অভিজ্ঞ আলেম রাক্বীর শরণাপন্ন হওয়া ।