“ডায়াগনোসিস রুকইয়াহ” কী? এ ব্যাপারে ইতিপূর্বেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । যে কারণে এখানে তার পুনরাবৃত্তি সমীচীন মনে করছি না । আগ্রহী পাঠকগণ এই লিংকে ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন ।
লিংক—https://muftialamin.com/diagnosis-ruqyah/
বক্ষমান আলোচনায় আমরা জানবো— রাক্বীর কাছে না গিয়েও নিজে নিজেই কীভাবে “ডায়াগনোসিস রুকইয়াহ” করা যেতে পারে । যদিও সরাসরি অভিজ্ঞ কোনো রাক্বীর শরণাপন্ন হয়ে ডায়াগনোসিস রুকইয়াহ করা হলে রোগ নির্ণয় করা সহজ হয়! কিন্তু রাক্বীর অসহজলভ্যতা, আর্থিক অসচ্ছলতা, পারিবিারিক সাপোর্ট না থাকা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সবার পক্ষে সরাসরি রাক্বীর সাহায্য নেয়া সম্ভব হয় না । তাদের উদ্দেশ্যেই আজকের এই লেখা ।
১) সুযোগ থাকলে সুস্থতার নিয়তে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নিন । (ঐচ্ছিক)
২) আপনার মধ্যে জ্বীন-যাদু, হিংসা বা বদনজরের কোন প্রভাব থাকলে আল্লাহ পাক যেন তা প্রকাশ করে দেন এবং সুস্থতা লাভের সঠিক পথের দিকনির্দের্শনা দেন— এই নিয়তে প্রথমে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ তিনবার করে তিলাওয়াত করুন (আয়াতগুলোর অর্থ দেখে নিলে ভালো) ।
- ১। সূরা ফাতিহা— ৫
২। সূরা বাক্বারা— ৬৯, ৭০
৩। সূরা শু’আরা— ৬২
৩) আপনার মধ্যে জ্বীন-যাদু, হিংসা বা বদনজরের কোন প্রভাব থাকলে আল্লাহ পাক যেন তা প্রকাশ করে দেন— এই নিয়তে নিয়মিত ফজর ও মাগরিব/এশার পরে নিচের লিংক থেকে “মুতলাক্ব রুকইয়াহ” এর যেকোন একটি অডিও তিলাওয়াত শুনবেন । এভাবে দুই সপ্তাহ বা কমপক্ষে হলেও এক সপ্তাহ শুনবেন।
লিংক— https://muftialamin.com/mutlaq-ruqyah/
আপনি আক্রান্ত হয়ে থাকলে পুরো তিলাওয়াত শোনার পরে পরে— শরীর জ্বালাপোড়া, সুই ফুটানোর অনুভূতি, বমি কিংবা বমি ভাব, মাথাব্যাথা, প্রচণ্ড ঘুম, শরীর ব্যাথা বা দূর্বল ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেতে পারে । তবে এতে ভয়ের কিছু নেই—এগুলো সাময়িক । তিলাওয়াত শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই কেটে যাবে— ইনশাআল্লাহ্ । তিলাওয়াত শুনার পরে আপনার অনুভূতি বা প্রতিক্রিয়া কেমন ছিলো আমাকে লিখুন । আপনার সম্ভাব্য সমস্যা সম্পর্কে আমি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো—ইনশাআল্লাহ্ ।
তিলাওয়াত শুনতে গিয়ে আরো কী কী প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিংক ভিজিট করুন।লিংক—https://muftialamin.com/diagnosis-ruqyah/
যেভাবে শুনবেন— লিংকটিতে ভিজিট করলে কয়েকটি তিলাওয়াত পাবেন । সেখান থেকে যেকোন তিলাওয়াত শুনলেই হবে । তবে একটু লম্বা তিলাওয়াতগুলো শুনলে বেশি ভালো । একেক দিন একেকটি তিলাওয়াত শুনে যাচাই করে দেখবেন যে, কোন তিলাওয়াতটি শুনলে আপনার অসুবিধা মনে হয় । যে তিলাওয়াতটি শুনলে শারীরিক-মানসিক কোন প্রতিক্রিয়া বা খারাপ লাগা কাজ করবে সেটি বেশি করে শুনবেন ।
দিনরাত মিলিয়ে আপনার হাতে দৈনিক দুই ঘণ্টা তিলাওয়াত শোনার মতো সময় থাকলে নিচের পদ্ধতি ফলো করুন ।
রিকমেন্ডড পদ্ধতি— সকালে ফজরের পরে লিংকের দুই এবং ছয় নম্বর তিলাওয়াতটি শুনবেন । এবং রাতে মাগরিব বা এশার পরে চার এবং পাঁচ নম্বর তিলাওয়াতটি শুনবেন । এভাবে দুই সপ্তাহ বা কমপক্ষে এক সপ্তাহ শুনবেন ।
পূর্ব প্রস্তুতি— ওযূর সহিত শোনার চেষ্টা করবেন । তবে মাঝখানে ওযূ ভেঙ্গে গেলে নতুন ওযূ করার প্রয়োজন নেই । অবশ্যই কাজকর্ম থেকে ফ্রি হয়ে পূর্ণ মনযোগের সাথে শুনবেন । প্রচণ্ড ঘুম আসতে পারে । নিজেকে সজাগ রাখার ট্রাই করবেন । অনেক সময় পেশেন্ট এর সমস্যা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের শক্ত যাদু বা শক্তিশালী কোন জ্বীন থাকলে এক দুইবার শোনার পরে কোন প্রতিক্রিয়া নাও দেখা যেতে পারে, কারণ এসব ক্ষেত্রে জ্বীন রুকইয়াহ এর প্রভাব বা কষ্ট নিজে সহ্য ও হজম করে; রোগীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ হতে দেয় না । যেকারণে মাত্র ২/১ বার বা ২/১ দিন শুনে সে রেজাল্ট এর উপরে ভিত্তি করে ডিসিশন নেয়া যায় না । কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সকাল-বিকাল শুনুন । একজন রাক্বীর তত্ত্বাবধানে শুনতে পারলে ভালো । যাতে আপনার আপডেটগুলো জানিয়ে ওনার থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারেন ।
নিয়ত— আপনার সমস্যার সমাধানের নিয়ত করে শুনবেন । উদাহরণ স্বরূপ আপনার বিয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলে এভাবে নিয়ত করতে পারেন—
হে আল্লাহ! আমার মধ্যে জ্বীন, যাদু কিংবা হিংসা ও বদনজর সম্পর্কিত কোন সমস্যা থাকলে আপনি প্রকাশ করে দিন। আমার বিয়ের ব্যাপারে কোন বাধা থাকলে কুরআনের বরকতে আপনি তা নষ্ট করে দিন এবং আমাকে সুস্থ করে দিন।
অথবা এভাবে কমন নিয়ত করতে পারেন— হে আল্লাহ! আমার মধ্যে জ্বীন, যাদু কিংবা হিংসা ও বদনজর সম্পর্কিত কোন সমস্যা থাকলে আপনি প্রকাশ করে দিন। আমার উপরে থাকা জ্বীনের আছর কিংবা নজর, মানুষের বদনজর বা কোন যাদু থাকলে নষ্ট করে দিন এবং আমাকে সুস্থ করে দিন । এভাবে নিজ নিজ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের নিয়তে মনযোগের সাথে শুনবেন ।