বড়দের তুলনায় শিশু বাচ্চারা বদনজরে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে । এবং এদের বেশিরভাগ প্যারানরমাল সমস্যাই বদনজর কেন্দ্রিক হয়ে থাকে । বাচ্চারা বদনজরে আক্রান্ত হলে তাদের কিছু লক্ষণ দেখা যাবে ।
যেমন—
- হঠাৎ করেই বাচ্চারা মায়ের বুকের দুধ/ খাবার না খাওয়া
- অনবরত অস্বাভাবিক কান্নাকাটি করা
- দিব্যি সুস্থ বাচ্চা হঠাৎ করেই নেতিয়ে পড়া
- একদম হুট করেই স্বাস্থ্যহানি হওয়া
- হুট করেই গায়ের রং পরিবর্তন হয়ে কালো হয়ে যাওয়া
- জেদ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি ।
এসব সমস্যাগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বদনজরের কারনে হয়ে থাকে। তবে আল্লাহ চাইলে এর চিকিৎসা খুবই সহজ । আল্লাহর কালামের উপরে পূর্ণ বিশ্বাস ও ভরসার সাথে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো ফলো করলে আশাকরি সমস্যাগুলো দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে— ইনশাআল্লাহ্ ।
১। মুআওয়াযাতাইন (সূরা ফালাক ও নাস) এবং বদনজরের দোয়া পড়ে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিতে হবে।
হাদীস— আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “মুআওয়াযাতাইন” (সূরা ফালাক ও নাস) নাযিল হওয়া পর্যন্ত (বিভিন্ন বাক্য/দোয়ার মাধ্যমে) জীন এবং মানুষের বদনজর থেকে (আল্লাহর কাছে) আশ্রয় চাইতেন। যখন সূরা দু’টি নাযিল হলো; এই দু’টিকেই গ্রহণ করলেন এবং অন্যগুলো পরিত্যাগ করলেন। সুনানে তিরমিযী (২০৫৮)
আমল পদ্ধতি— সূরা ফালাক এবং সূরা নাস প্রতিটি তিনবার করে পাঠ করে হালকা থুথুর সহিত বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিবে । সমস্যা দূর না হওয়া পর্যন্ত সকাল-বিকাল সূরা নাস ও ফালাক তিলাওয়াত করে এভাবে রুকইয়াহ করে যাবে । বাচ্চা যদি নিজে নিজে পড়ার উপযুক্ত হয় সেক্ষেত্রে সে নিজে সূরা ফালাক ও নাস তিনবার করে পড়ে উভয় হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীর মুছে নিবে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অভিভাবকগণও এই আমলটি করে দিতে পারেন । সূরা দুটি পড়ে নিজেদের হাতে ফুঁ দিয়ে বাচ্চার শরীর মুছে নিতে পারেন ।
বদনজরের দোয়া— ১
أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
বাংলা উচ্চারণ — উঈযুকুমা বি-কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাহ, মিন কুল্লি শাঈত্বনিন ওয়া হাম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাহ
অর্থ— আল্লাহ তা‘আলার পরিপূর্ণ জাত ও সিফাতের ওসিলায় আমি তোমাদের উভয়ের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করছি প্রত্যেক শয়তান, জীবন নাশ কর বিষ এবং প্রত্যেক ধরণের আপতিত বদ নযর থেকে। সুনানে তিরমিযী-২০৬৪
দৃষ্টি আকর্ষণ— অনারবী কোনো ভাষায় আরবীর বিশুদ্ধ উচ্চারণ লেখা সম্ভব নয়। অতএব আরবী পড়তে পারে এমন কারো থেকে শুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নিতে হবে।
২। মুআওয়াযাতাইন পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে বাচ্চাকে পান করাতে হবে ।
আমল পদ্ধতি— সূরা ফালাক এবং সূরা নাস প্রতিটি তিনবার করে পাঠ করে পানিতে ফুঁ দিয়ে সেই পানি সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে বাচ্চাকে পান করাবেন ।
৩। মুআওয়াযাতাইন পড়ে গোসলের পানিতে ফুঁ দিয়ে বাচ্চাকে গোসল করাবেন । প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে (আপনার রাক্বী পরামর্শ দিলে) গোসলের পানির সাথে বাবা-মায়ের ওযূর পানি মিশিয়ে নিবেন।
আমল পদ্ধতি— একবার দরুদ শরীফ এবং সূরা ফালাক এবং সূরা নাস প্রতিটি তিনবার এবং শেষে পুনরায় দুরুদ শরীফ পাঠ করে গোসলের পানিতে ফুঁ দিয়ে উক্ত পানি দিয়ে বাচ্চাকে গোসল করাবেন । মাথার পিছন ভাগ থেকে পানি ঢালা শুরু করবেন।
৪। বদনজর নষ্টের নিয়তে নিম্নোক্ত রুকইয়াহ তিলাওয়াতটি দৈনিক একবার শোনাবেন। (৩/৭ দিন)
রুকইয়াহ—