পড়ালেখায় মনোযোগী ও মেধাতালিকায় ক্লাসের প্রথম সারির ছাত্র-ছাত্রী হঠাৎ করেই যদি— পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে উঠে, পড়তে বসতে চায় না, পড়তে বসলেই মাথাব্যথা করে, পরীক্ষা আসলেই অসুস্থ হয়ে যায়— সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে যে, উক্ত ছাত্র-ছাত্রী ‘জ্বীনের আছর, যাদু কিংবা পড়ালেখার উপরে হাসাদ’ এর কোনো একটিতে আক্রান্ত হয়েছে। তাকে ‘রুকইয়াহ’ করলে আশা করা যায় সমস্যা কেটে যাবে—ইনশাআল্লাহ্।
কেস স্টাডি : এই কিছুদিন পূর্বেই আমার ঢাকা সেন্টারে এই টাইপের একজন রোগী এসেছিলেন। মেয়েটি কওমী মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্রী । ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল । সারাদিন কিতাব নিয়ে পড়ে থাকাই ছিলো যার অভ্যাস, হঠাৎ করেই তার লেখাপড়ায় মন বসেনা, যে মেয়ে মাদরাসা থেকে বাসায়ই আসতে চাইতো না; তার এখন মাদরাসায় যেতেই ভালো লাগেনা, মাদরাসার কথা শুনলেও যেন অসুস্থ হয়ে যায়, পড়তে বসলেই মাথাব্যথা করে, আর পরীক্ষা আসলে তো একদমই অসুস্থ হয়ে যায় ।
অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছে, জ্বীনের সমস্যা, যাদুর সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করেছে, হরেক রকমের ট্রিটমেন্ট দিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছরে অনেক কিছু করেও রোগী সুস্থ হচ্ছিলো না।
অবশেষে আমার কাছে আসার পরে বিস্তারিত হিস্ট্রি শুনেই আঁচ করতে পেরেছি যে, হাসাদের সমস্যা। আরো স্পেসিফিক করে বললে রুকইয়াহ’র পরিভাষায় এই সিচুয়েশনকে আমরা বলি— ‘হাসাদুন আলাদ দিরাসাহ’ অথবা আরো ন্যারো করে বললে— “হাসাদুল আসহাবি/ওয়াল আসদিকাঈ/ওয়াঝ ঝুমালাঈ আলাদ দিরাসাহ”।
দরুদে ইবরাহীম পড়ে হাসাদের প্রভাব ধ্বংসের নিয়তে কয়েকবার “রুকইয়াহ জিবরীল”, সূরা ফালাকের শেষ আয়াত, সূরা বাকারার ১০৯ নং আয়াত এবং সূরা নিসার ৫৪ নং আয়াত পড়ে রুকইয়াহ শুরু করলাম । কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হয়ে খিঁচুনি টাইপের অবস্থা হলো, চেয়ারে বসা অবস্থায় বাঁকা হয়ে এক হাত প্রায় উঁচু হয়ে গেল, আমি তিলাওয়াত চালিয়েই গেলাম, এক পর্যায়ে শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে গেলো— আলহামদুলিল্লাহ্।
চেক করার উদ্দেশ্যে হাতের কাছে থাকা মিশকাত শরীফ পড়তে দিলাম, ঠিকঠাক ভাবেই পড়তে পেরেছে, মাথাব্যথা ইত্যাদি কোনোই সমস্যা হয়নি—আলহামদুলিল্লাহ্।