যাদের সন্তান হচ্ছেনা!

দীর্ঘদিন যাবত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন, ডাক্তারি ডায়াগনোসিসে স্বামী-স্ত্রীর কারোই কোন সমস্যা ধরা পড়ছেনা, এতদাসত্ত্বেও যাদের সন্তান হচ্ছেনা!

আপনার জন্য প্রথম পরামর্শ হচ্ছে—নিয়মিত দোয়া

তাকদীরের এ ফয়সালার ওপর ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ পাকের কাছে বেশি বেশি দুয়া করতে থাকুন । হয়তবা এ বিলম্ব বা না দেয়ার মাঝেই আল্লাহ আপনাদের জন্য কোন কল্যান রেখেছেন ।

কুর‌আনে নিঃসন্তান এক দম্পতির ঘটনা বর্ণিত হয়েছে— যেখানে স্ত্রী ছিলেন বন্ধ্যা, স্বামী ছিলেন বয়োবৃদ্ধ । এতদাসত্ত্বেও দোয়ার বরকতে আল্লাহ তাদেরকে বৃদ্ধ স্বামীর ঔরসে বন্ধ্যা স্ত্রীর গর্ভে সন্তান দিয়েছিলেন। তারা হচ্ছেন হযরত যাকারিয়া (আ.) এবং ঈশা দম্পতি ।

ইমাম কুরতুবী এবং ইমাম বগবীর বর্ণনা মতে হযরত যাকারিয়া (আ.) এর স্ত্রীর নাম ছিলো ‘ঈশা’ । তিনি যখন মা হয়েছিলেন তখন তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। আর হযরত যাকারিয়া (আ.) এর বয়স হয়েছিল ১২০ বছর। অথচ মেডিকেল সাইন্স মতে এই বয়সে কোনো পুরুষের স্পার্মে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা এবং কোনো নারীর জরায়ুতে গর্ভধারণের যোগ্যতা থাকার কথা নয়। কিন্তু আল্লাহর কুদরত তো সাইন্সের উর্ধ্বে। এই বয়সে সন্তান দিয়ে তিনি দেখিয়ে দিলেন যে, চাইলে তিনি সাইন্স পরিবর্তন করে‌ও কাউকে অনুগ্রহ করতে পারেন।

তবে দোয়ার মতো দোয়া করতে হবে, নিয়মিত করতে হবে, যেমনটা তারা করেছিলেন। তাফসীরে কুরতুবী এবং বাগাবীতে আরো বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত যাকারিয়া (আ.) সন্তান চেয়ে দোয়া করার দীর্ঘ চল্লিশ বছর পরে তা ক্ববুল করা হয়েছিল। আপনি ভাবতে পারছেন! নবীর দোয়া ক্ববুল হতে যদি চল্লিশ বছর সময় লাগতে পারে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের জন্য কত বছর লাগা যৌক্তিক? অথচ আমরা তো ২/৪ বার দোয়া করেই অধৈর্য হয়ে পড়ি!!

অতএব, অল্প কয়েকদিন দোয়া করে হতাশ হ‌য়ে বসে থাকা যাবে না, নিয়মিত দোয়ার আমল চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ যেদিন কল্যাণকর মনে করবেন সেদিন ক্ববুল করবেন—ইনশাআল্লাহ্ । আর ক্ববুল না হলে বুঝে নিতে হবে এর মধ্যেই আল্লাহ পাক কল্যাণ রেখেছেন।

আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব আল্লাহর‌ই । তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন । তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন; (৪৯) অথবা তাদের দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়‌ই (জমজ সন্তান) । আর যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন । তিনি নিশ্চয়ই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। (৫০) সূরা শুরা— ৪৯, ৫০ ।

দ্বিতীয় নম্বর পরামর্শ হচ্ছে — বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া

স্বামী-স্ত্রী উভয়েই খুব বেশি বেশি ইস্তেগফার করার নিয়মিত অভ্যাস করে ফেলুন । ইস্তেগফার করলে আল্লাহ সন্তান দিয়ে সাহায্য করবেন মর্মে কুর‌আনে স্পস্ট উল্লেখিত হয়েছে। সূরা নূহ, আয়াত নং ১২ ।

তৃতীয় পরামর্শ হচ্ছে— ডাক্তারি চিকিৎসার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক চিকিৎসা গ্রহণ করা 

অনেক সময় মহিলাদের জরায়ুতে বসবাসকারী জ্বিনের কারনে বাচ্চা কনসিভ হয়না, অনেক সময় আশিক জ্বিনের কারনেও বাচ্চা হয়না, অনেকের আবার বাচ্চা না হওয়ার পিছনে যাদুও থাকতে পারে । আপনার বাচ্চা না হ‌ওয়ার পিছনে‌ও এ ধরণের কোনো আধ্যাত্মিক কারণ রয়েছে কিনা ‘ডায়াগনোসিস রুক‌ইয়াহ’ করে তা নিশ্চিত হতে হবে। 

এসম্পর্কিত আরো বিস্তারিত জানতে নিম্নোক্ত লিংকের ভিডিওটি দেখতে পারেন :

https://fb.watch/jHruDOzPNk/

মোট কথা, ডাক্তারি চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি অবশ্যই রুকইয়াহ চিকিৎসাটাও গ্রহণ করা উচিত । তবে অবশ্যই তন্ত্র-মন্ত্র, শিরকি তাবিজ-কবজ ইত্যাদি থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন । 

আল্লাহ আপনাকে নেক সন্তান দান করুন ।

error: Content is protected !!