বন্ধ্যাত্ব! এ দায় কার?

বন্ধ্যাত্ব’ একটি ভয়ংকর শব্দ । হাজারো দম্পতির চোখের পানিতে সিক্ত একটি শব্দ । শত শত ডিভোর্সের অন্যতম কারণ এই শব্দটি । শত সুখের পরেও ‘সুখহীন দাম্পত্য জীবন’  কাটানোর কষ্ট লুকিয়ে আছে এই একটি শব্দের মাঝে ।

পরিতাপের বিষয় হলেও ইহাই সত্য যে, বন্ধ্যাত্ব বিষয়ে একচেটিয়াভাবে নারীদেরকেই কেবল দোষারোপ করা হয় । বছরে কত নালায়েক পাষণ্ড স্বামী যে শুধু এই এক অযুহাত দেখিয়ে তার স্বামীভক্ত, নির্দোষ, দ্বীনদার ও নিরাপরাধ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে যাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই ।

অথচ পরিসংখ্যান বলছে, বন্ধ্যাত্বের জন্য ৪০% ক্ষেত্রে নারী যেমন দায়ী, ঠিক সম পরিমাণ অর্থাৎ ৪০% ক্ষেত্রে পুরুষও দায়ী । বাকি ১০% ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয় দায়ী । বাদবাকি ১০% এর কারণ অজানা থেকে যায় । সুতরাং কোন দম্পতির বাচ্চা না হলে একচেটিয়াভাবে স্ত্রীকে দায়ী করা অজ্ঞতা ও মূর্খতা বৈ কিছু নয় ।

যতগুলোর কারণে পুরুষ বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম হয়ে থাকে তার মধ্যে ‘স্পার্ম’ এর ত্রুটি অন্যতম । যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ স্পার্ম না থাকা (লো কাউন্টিং), স্পার্ম কম গতি সম্পন্ন হওয়া (মোটিলিটি) ইত্যাদি ।

সুতরাং বাচ্চা না হলেই একচেটিয়াভাবে স্ত্রীকে দায়ী না করে উভয়ের ডায়াগনোসিস করা প্রয়োজন । এবং শুধু ফিজিক্যাল ডায়াগনোসিস নয়, পাশাপাশি আধ্যাত্মিক ডায়াগনোসিস (রুকইয়াহ শারইয়্যাহ এর মাধ্যমে পরীক্ষা) ও করা উচিত ।

আর হ্যাঁ, ফকির, কবিরাজ, ওঝা, বৈদ্য যার কাছে যা শুনবেন, স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই দৌড় দিবেননা । এগুলো ৯৯% ক্ষেত্রেই শিরক ও হারাম । যা মারাত্মক ক্ষতি বৈ বিন্দুমাত্র উপকার বয়ে আনবেনা ।

ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোন সমস্যা পাওয়া গেলে তার চিকিৎসা করুন । এবং পাশাপশি কুরআনি চিকিৎসা করুন । আপনি কুরআনের যেকোন অংশ থেকে পারেন— চিকিৎসার উদ্দেশ্যে নিয়মিত তিলাওয়াত করুন । তিলাওয়াত শেষে পানিতে ফুঁ দিয়ে তা পান করুন । সম্ভব হলে কোন অভিজ্ঞ আলেম রাক্বীর কাছে গিয়ে বাচ্চা না হওয়ার পিছনে জ্বীন-যাদুর সমস্যা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে কি না পরামর্শ করে দেখুন । আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- স্বামী-স্ত্রী উভয় মিলে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকুন ।

সকল সন্তানহীন দম্পতিকে আল্লাহ ‘বাবা-মা’ ডাক শোনার তাওফীক দান করুন ।

error: Content is protected !!