রোগী একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার । কিন্তু এরকম একটি হাই ডিমান্ডেবল স্কিলড পার্সন হয়েও লেখাপড়ার শেষ করার পরে সেই ২০১৪ সালে থেকে তিনি ‘রিযিক’ এর কষ্টে ভুগছিলেন । বিজনেস কিংবা চাকরি যেটাই করেন—সেখানেই বিফল । যে কোম্পানি তিনি নিজ হাতে দাঁড় করিয়ে দেন, কিছুদিন পরে সেই কোম্পানি থেকেও তার চাকরি চলে যায় ।
প্রডাক্ট চাহিদা, প্রতিষ্ঠান প্লেসমেন্ট সবকিছু বিবেচনায় কাগজে-কলমে যেখানে একটি সাকসেসফুল বিজনেস মডেল দাঁড়ানো সম্ভব, সেখানে তিনি কিছু করতে গেলেই ‘লস’ খেয়ে যান । ২১০৪ থেকে ২০২৩ তার এভাবেই চলছিলো । এতদিন পরে মনে সন্দেহের উদ্রেক হওয়ায় গত ৩০/০১/২৩ তারিখে তিনি আমার ঢাকা সেন্টারে “রুকইয়াহ ডায়াগনোসিস সেশন” এর জন্য এসেছিলেন ।
নিয়মমাফিক তাকে তিলাওয়াত শুরু করলাম । প্রথমে দীর্ঘ একটা সময়ে তার কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছিল না । উল্টো তিলাওয়াত শুনে তার প্রশান্তি অনুভূত হচ্ছিলো । আবেগে তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিলো । এরপরে জ্বীন সংক্রান্ত আয়াত পড়লাম, কিন্তু তেমন কোন প্রতিক্রিয়া নেই । যখনই যাদু সংক্রান্ত আয়াত তিলাওয়াত শুরু করলাম— কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই তার অবস্থা ভয়ংকর হতে শুরু করলো ।
কিছুক্ষণ পরপর বিকট আওয়াজ করে উঠতেছিলেন, একটা পর্যায়ে শরীরে জ্বীন পজেসড করলো, পেট ও বুক উচু করে চেয়ারসহ পিছনের দিকে উল্টে ফেলে দিতে চাইলো, রোগী পুরুষ হওয়ায় সহজেই কন্ট্রোলে নিতে পেরেছিলাম, কাছে গিয়ে মাথায় এবং কাধে হাত রেখে তিলাওয়াত করতেই জ্বীন পজেসন ছেড়ে দিয়ে রোগীকে নিস্তেজ করে রাখলো । বেশ কিছুক্ষণ তিলাওয়াত করার পরে রোগী স্বাভাবিক অবস্থায় আসলো । সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং পরবর্তীতে অন্য রোগী ছিলো বিধায়, সে দিনের মতো ওখানেই সেশন শেষ করে দিলাম । এবং যাদু নষ্টের গোসলসহ কিছু আমল দিয়ে পরবর্তী আরেকটি সেশনের ডেট নিতে বললাম । আশাকরি সঠিকভাবে রুকইয়াহ করে গেলে উক্ত ভাই তার এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন—ইনশাআল্লাহ্ ।
দৃষ্টি আকর্ষণ— যাদের ব্যবসা বা চাকরিতে সমস্যা হচ্ছে বা আদৌ কোন চাকরি হচ্ছেনা— উপরের কেস স্টাডি পড়ে তাদের কখনোই এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, রুকইয়াহ করালেই এ সব সমস্যার নিশ্চিত সমাধান হয়ে যাবে! আদতে বিষয়টি এমন নয় । বরং রুকইয়াহ করা হলে তখনই সমাধানের আশা করা যায়— যখন এটা প্রমাণিত হবে যে, চাকরি বা ব্যবসার এ অবস্থার পিছনে জ্বীন, যাদু বা বদনজরের প্রভাব রয়েছে । আল্লাহ ক্ববুল করলে তখনই কেবল রুকইয়াহ করে সে প্রভাব নষ্ট করে এ অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব ।
এ বিষয়ে অনেকেই আমাদের কাছে ডায়াগনোসিস রুকইয়াহ করতে আসেন, কারো বেলায় হয়তো দেখা যায়— এর পিছনে জ্বীন-যাদুর সমস্যা রয়েছে । আবার কারো হয়তো এ জাতীয় কোন সমস্যাই ধরা পড়ে না। আপনার বেলায় কোনটা পাওয়া গেল এর উপরে পরবর্তী ধাপ নির্ভর করে ।
মোট কথা— রিযিকের সংকীর্ণতা দেখা দেয়া মানেই এই নয় যে, এর পিছনে জ্বীন-যাদু আছে । বরং তাকদীর, নিজের কৃত গুনাহ, আত্মীয়তার হক নষ্ট করাসহ বিভিন্ন কারণেই রিযিকের সংকীর্ণতা ও বে-বরকতি দেখা দিতে পারে । তেমনি একটি কারণ হচ্ছে— যাদু । আপনার ক্যারিয়ার তথা ব্যবসা, চাকরি ইত্যাদি আপনার রিযিক উপার্জনের যে মাধ্যম আছে— সেখানে জ্বীন, যাদু বা বদনজরের প্রভাব থাকলে সে কারণেও এটি হতে পারে ।
আরো ক্লিয়ার করে ভাষায় বললে — যাদুই একমাত্র রিযিকের সংর্কীর্ণতা বা ব্যবসা-চাকরি ইত্যাদির বিফলতার কারণ নয়, বরং এর পিছনে যতগুলো কারণ থাকতে পারে— জ্বীন, যাদু ও বদনজর তার মধ্যে অন্যতম একটি ।
অতএব, এ সব বিষয়ে যাদের সমস্যা হচ্ছে, তাদের একবার ডায়াগনোসিস রুকইয়াহ করে দেখা উচিত । তাকদীরের ফায়সাল হলে তো ধৈর্য ধরে মেনে নেয়া ব্যতিত উপায় নেই, তবে যাদু ইত্যাদির কারণে হলে অবশ্যই রুকইয়াহ’র মাধ্যমে এর সমাধান সম্ভব—ইনশাআল্লাহ্ ।